হুলোকতা‾
একদিন বাড়ীর রাস্তা
দিয়ে হাঁটছি, , সঙ্গে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড পুচকু ... সামনে দিয়ে একটি
পরিচিত হাঁড়ি মুখো হুলো যাচ্ছিল ... পুচকু বলল ‘ কি নিশ্চিন্তে যাচ্ছে দেখো ... কোন ভাবনা চিন্তা নেই ...... ’ আমি একটু এগিয়ে গেলাম নিছক কৌতূহলের তাগিদে ...
আর সামনে থেকে একটা বিড়বিড় – বিড়বিড়
আওয়াজ শুনে থমকে গেলাম । হুলোটা স্বগতোক্তি করছে ...
‘উফ কি ভাগ্য করেই একটা বৌ পেয়েছিলাম ...... বাড়ি
ঢুকলেই ঝগড়া .. ক্যাওম্যাও... আমার কি আর চুরি করার ক্ষমতা আছে ? ছেলেটাও হয়েছে
তেমনি... যেন বেরালতপিস্যি । আমাকেই রাতদিন চুরির ধান্দায় ঘুরতে হয় ... দুটো নাতি
নাতনি ... ওগুলোও চুরি করতে শেখেনি... আর বৌমা একটা অপদার্থ ... নাতিটা রাতদিন
ফ্যা ফ্যা করে ঘুরছে... কিছু বলেও না তাকে... আর নাতনিটা রাতদিন আয়নার সামনে কি যে বসে থাকে
আর কি সব মাখে, আর একগাদা বন্ধু জুটিয়ে কোথায়
যে যায়ে ষষ্টিঠাকরুন জানেন ... সেদিন আবার কার বাগানে পিকনিক করে এলো । আমার জন্যে
অবিশ্যি একটুকরো মাছ এনেছিল , তাই নিয়ে গিন্নির সঙ্গে ধুন্দুমার কাণ্ড ... ওর
জন্যে কেন আনেনি ... আসলে নাতনিটা আমার খুব ন্যাওটা কিনা ...
‘ যাকগে , এই
বুড়ো হাড়ে আর ঝগড়া করার খ্যামতা নেই ... দুটো খেতে পেলেই হল ... তারো কি যো আছে
বৌয়ের জ্বালায় ? সেদিন হালদার দের দুধের ডেকচিতে মুখ দিয়ে কি বিপত্তি ... রান্নার
ঠাকুর আমার ল্যাজ পুড়িয়ে দিলো । আমার ল্যাজের বাহার নিজমুখে বলতে লজ্জা করে......
সেই ল্যাজে আগুন দেওয়া ? নাতনি অবিশ্যি কি সব মলম টলম লাগিয়ে দিল ... আর বৌ
অগ্নিমূর্তি ...একবেলা খেতেই দিলনা । ’
আমি পুচকু কে
বললাম তবে যে বললে বেড়ালদের কোন চিন্তাভাবনা নেই ? আমাকে পুচকু এক ঠেলা মেরে বলল
ধ্যাত দুপুর বেলা বেঞ্চিতে বসে কি আজেবাজে বিড়বিড় করছ ? ঘুমতে হয় তো বাড়ি চল ।
অগত্যা বাড়ি ঢুকলাম ... কিন্তু পুচকু জানেনা আমি মোটেই স্বপ্ন দেখছিলাম না ।