Subscribe in a reader GAN KOBITA NATOK: April 2016

Saturday 30 April 2016

আবিষ্কার ABISHKKAR


আবিষ্কার

তোমার লতাবিতানে ফুটেছিল একটি নীরব ফুল 
কেউ দেখেনি , স্পর্শ করেনি তাকে -----
দিনমানে একা সে করেছিল সুগন্ধ বিকিরণ ,
কেউ দুহাতে মাখেনি তার ঘ্রাণ ------

মিলিয়ে যাবার আগে তোমার বাতায়ন -তলে 
তোমার পায়ের স্পর্শে আবার তার জেগে ওঠা -----
তুমি তুলে নিলে বুকে তাকে 
শেষ -বিদায়ের ক্ষণে -----
দুহাতে জড়িয়ে সুগন্ধ নিলে তার ----

ঝরে যেতে যেতে তোমার কোলে 
সে পেল এই জনমের প্রথম অভিধা 
তোমার জীবনে তার আবিষ্কার 
তার  জন্মের শেষ মধুর  পুরষ্কার ------

Friday 29 April 2016

অক্ষয় তৃতীয়া AKSHAY TRITIYA

অক্ষয় তৃতীয়া


অনেক কান্না কেঁদে
অনেক বেদনা সয়ে
অনেকটা ভার বয়ে
আজ পৃথিবী সর্বংসহা।
যে তরু ছায়া দেয়, ফল দেয় ফুল দেয়,
সেও টানে মাটি থেকে তার জীবনের নির্যাস।
উল্কাপাতের ঝড়ে কত প্রাণী
বিদায় নিয়েছে এই সুখনীড় থেকে
আবার ভরেছে জননীর কোল
নদীরা নেমেছে তুষারের শৃঙ্গ থেকে
মাটিকে ভরিয়ে দিতে পত্রে, পুষ্পে, শস্যে
প্রতিদিন নবজন্মের শঙ্খধ্ধনি জানিয়ে দিচ্ছে
কোন শেষ নেই, প্রতিমুহূ্র্তে উন্মেষ
জীবন অক্ষয়, জননীর রক্ষাকবচে আছে
     জীবনের জয়।

প্রক্সি PROXY

আমার যমজ বোন ছিল আমারি মতন দেখতে
হলে কি হবে সে ছিল লক্ষী মেয়ে,
আমি ছিলাম পাহাড়ে।

মা আমাকে ঘরের কাজে লাগালে
আমি ফাঁকি মেরে সব ঝামেলা
ওকে দিয়েই পুষিয়ে নিতাম।

সে ছিল সব বদনামের ভাগী
আমার যত কুকর্মের দায় মাথায় নিয়ে
মায়ের বকা হজম করত হাসিমুখে

তখনও জানিনি তার ভাগ্যের ডালিতে
কি আছে শেষপর্যন্ত।

একদিন সন্ধ্যাবেলা টিউশনির ক্লাস সেরে
আমরা দুবোন ঘরে ফেরার পথে
একদল জানোয়ার ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার উপর।

আমার ঐ  শান্ত বোন মা কালীর ভীষণা মূর্তি ধরে
ওদের হাত থেকে প্রাণপণে বাঁচাল আমায়।
কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে পারলনা।

রাক্ষসের নখরাঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল
তার অপাপবিদ্ধ দেহমন।

আমার মরণটাকে নিয়ে যাবার সময়  সে আমায়
তার ফুলের মত জীবনটুকু উপহার দিয়ে
হাসিমুখে বলে গেল,

'ভাল থাকিস, বোন।'

Thursday 28 April 2016

ছবি CHHOBI

আমি ছবির ভিতর থেকে 
স্পষ্ট দেখতে পাই সব

হে ভগবান, 
দয়া করো
একটা রাত 
ছবির ভিতর থেকে
নেমে এসে
সারারাত গল্প করে কাটাই
ওর সাথে------ 


আমি জানি
রোজ রাতে ও কার স্বপ্ন দেখে

জানো, ভগবান...ওর সাধের বেনারসিখানা
আজও আলমারিতে তোলা-----
 আমার দেওয়া সেই লাল কুঙ্কুম-টিপ...
আয়নার পাশে সাজানো ----

আর তো পরতে পাবেনা কোনোদিন-----

তবু 
একটি বার দয়া করো
যেন ছবি থেকে নেমে
আগের মতো ওর চুলের গুচ্ছ
 আবার গুছিয়ে দিই-----

একটা রাত ,
সারারাত
ওর পাশে
আগের মতন থাকি... 

প্রেমহীন PREMHEEN

প্রেমহীন

তুমি আমায় ভালোবাসো একথা শুনেছি বহুবার
আমার জন্য তুমি কী কী করতে পারো তাও শুনেছি
বহুদিন দিনের শেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষায় পর
যখন তোমায় আমায় দেখা হয়েছে
তোমার চোখে যে আলোর ঝলকানি আগে দেখেছি
সে কি আজ আর দেখতে পাই? কি জানি...

'শীতের ওড়নি পিয়া, গিরীষের বা
বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না'
কে জানে এ কোন প্রেমিক কবি হৃদয়ের নিবেদন

আজ সে সুর সেই মিঠে আখরে আর বাজেনা
জীবনে জীবন আর দুজনার ছন্দে মেলে কি?
প্রাণের তাগিদে, বাস্তবের দৌড়ে
প্রেম বোধহয় হারিয়ে গেছে আজ।

তাই ছেঁড়া তানপুরার তারে অক্ষম সুরে
গেয়ে যাই জীবনের শেষ গান।

Wednesday 27 April 2016

সাথী SAATHI

কয়েক পা শুধুই হাঁটতে এসেছি , 
সঙ্গী যে হয় , হোক্ না----
দু-তিন কদম জীবন সফর , 
হালকা বা দ্রুত চাল ----

দুহাত ধরার অমিল সুযোগ পেয়ে
শুধু দেখাটুকু অছিলা, মোহের ঘোরে ----

এ পথটুকু তোমায় ভরসা মেনে
নির্ভাবনায় আঁধারেতে যাই চলে

তুমি তো ডেকেছ , সাড়াও দিয়েছি আমি...
কদমে-কদম পথ চলি চিরকাল, ----

শপথের মালা দুলিয়েছি ভীরু বুকে,

অচেনা ছন্দ, তালে মিলিয়েছি তাল 

শেষ, না শুরু? শুরুর কোথায় শেষ?
গোধূলির রঙে সিঁথির আবির লাল------

Tuesday 26 April 2016

একলা EKLA




আমাকে  কেউ খেলতে নেয় না কেন?
আমি রান্নাবাটির খেলাঘর সাজিয়ে 
বসে আছি চিরজীবন ধরে ...
আমার খেলনাপুতুল
শিশু থেকে কিশোরী হয়ে
বুড়ি হতে চলল ------
জুটল না তার কপালে বিয়ের মালা...।
খেলাঘরের খুন্তি -কড়াই 
কেবল সাজানোই রইল...।

তোমরা কেবল উঠোন জুড়ে
কুমীর -ডাঙায় ব্যস্ত ...।
' ও কুমির ! 
তোর জলকে নেমে-এ-এ-এ- ছি!'
    
ছিঃ!

'এতখানি বয়স হল, জলে নামলি না!
কুমিরে ছুঁল না তোকে একটুও ?
মাথায় উঠল না সিথি-ময়ূর
দুধে-আলতা পায়ে!'

আমি লজ্জা ঢেকে একলা হয়ে থাকি
আসে না সেই গোধূলি-বেলার
সিঁথি-রাঙ্গানো মাহেন্দ্রক্ষণ -----
রজনীগন্ধার গোড়েমালা --

-' ও কুমির ! 
তোর জলকে নেমে-এ-এ-এ- ছি!'
    
ছিঃ!





Monday 25 April 2016

চলা CHAWLA

চলা


মনের মাথায় ডাঙশ, 
  আর   মুখের মাথায় বাড়ি ------------- 
থামলি কেন পথের মাঝে ? 
           চল না তাড়াতাড়ি।

মুখ MUKH

মুখ

আয়নায় বার বার 
একই মুখ দেখতে আমার ভালো লাগেনা আর । 
বড্ডই পুরনো মুখ, যেন কোন্ আদ্দিকালের ---- 
একই হাসিকান্না, আঁকাবাকা রেখা, 


ফেশিয়াল, রূপটানে এ মুখ বদলাবার নয় 
যুগের অমোঘ দাগগুলি 
প্রকৃতির দেওয়া ---তাকে মেনে নিতে হয়। 



তবু কেন বিদ্রোহ জাগে? মনে হয় আয়নাটা 
চুরচুর করে ভেঙে দিই? 
যতবার সামনে দাঁড়াই, কেন মনে হয় 
আমি কেন আর কেউ নই ???
কেন আর কেউ নই ???

নকল NAWKOL

ভাসিয়ে দিলাম যূথীর মালা নকল মালা পরব বলে
রঙ মেখেছি পাঙাস মুখে আসল ছবি ঢাকার ছলে।

আমি কি আর আমিই আছি ছিলাম যেমন আগের দিনে?
মাথায় ছিল আলতো খোঁপা বাজত কাঁকন রিনিরিনে।

মনের হাসি আর হাসিনা, নকল ঠোঁটে বেরঙ মেখে
কাজল দিয়ে আর সাজিনা বিফল কাচের আয়না দেখে।

আমায় দেখে ভুল বুঝোনা, এ যুগ এখন নকলেরই
এ ধাত যে আজ সয়ে গেছে আবালবৃদ্ধ সকলেরই।

ঝুটো মুখের মিথ্যে আলাপ চলবে কদিন জানি না তা
আমারও তাই আয়োজনে নকল মনের আসন পাতা।

Friday 22 April 2016

সময় SOMOY



                      সময়

তোমার হাতে উল-কাঁঁটা শেষ কবে দেখেছিলাম ?
ঐ কুরুশে-বোনা আসন টা তো 
       শেষ হলনা আজও ----
রান্নাঘরের হাতা - খুন্তির শব্দ কানে বাজে,

এখনই কি বিদায় নেবার সময় হলো তোমার?

এ সময় বড়ই অসময়, 
আরও অনেক কথা ছিল কওয়ার ---
দোরের পাশে তোমার চটি- জোড়া 
 বালিশে ঘুমন্ত চুলের সুবাস ---

এখনই কি যাবার সময় হলো তোমার?


ভালো করে বিদায়- টুকুও বলা হল না-----
পেলাম না কো সুযোগ বারেক
চরণদুটি ছোঁয়ার ...
আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে
জগত আঁধার করে ----

এই কি তোমার সময় চলে  যাবার ?





Thursday 21 April 2016

একা EKA




আমাকে কেউ খেলতে নেয় না কেন?
আমি সকালের আকাশে রাতের তারা গুনি
নদীর জলে এত যে শাপলা - শালুক
আমি কেবল সাগরে মুক্তা খুঁজি।

যদিবা  কখনো ্কোনো বৃষ্টি-রাতে
আমার দুচোখ ভেজে অঝোর- ধারায়
পূর্ণিমা -চাঁদ ধুয়ে যায় মায়া-  হাসিতে---
কান্না আমার মোছে না তার আঁচলে

আমার জন্যে কারো অপেক্ষা নেই
দরজা খুলে ব্যাকুল পথ-চাওয়া ----
শীতলপাটি পাখার বাতাসটুকু ---
থাক্ তোমাদের, আমি মিলিয়ে  যাই

ওগো আঁধার, ওগো পরম সাথী
ওগো আমার তারায়-ভরা রাতি
তুমিই শুধু রয়েছ আমায় নিয়ে
চিরজনম বাহুর পাশে ঘিরে।

Tuesday 19 April 2016

নীল আয়না NEEL AYNA




তুমি আয়নায় কাকে দেখো?
যাকে কোনোদিন কল্পনায়
বা স্বপ্নে
মনের মাঝে কোন স্থানই দাওনি?

এতদিন চিন্তার চোরাস্রোত বেয়ে
সে কখনো আশ্রয় চায়নি এই মনে
তাহলে আয়নার প্রতিবিম্ব হয়ে
আজ সে কেন এলো
রাতের ঘুম কেড়ে নিতে?

কেন আয়নার দিকে চেয়ে
তুমি হাসলে সে কাঁদে
তোমার চোখে জল দেখা দিলে
তার চোখ ওঠে হেসে?

তাহলে ওই আয়নাটাই
তোমার পরম শত্রুকে
বুকে ধরে লালন করেছে এতকাল?

চোখে-ঠোঁটে বিষ নিয়ে
সে তোমার  হৃদয়কে করেছে মৃতপ্রায়
আজ তোমার ভাবনায় সেই বিষ

          নীল......

Monday 18 April 2016

কান্না - হাসি KANNA-HASHI



'আমায় ছেড়ে থাকতে পারবে তুমি?' 

যেন একটা হাসির  ছেঁদো কথা ------
তখন তো না ভেবেই বলা 
ছেলেমানুষি ঢঙে -----

আজকের মত এত সত্যি
 ব্যাপারটা হবে একথা কি ভেবেছিলাম
কোনোদিন?

হয়তো তুমিও ভাবতে পারোনি এভাবে
হয়তো কেউ হেসেছিল অলক্ষ্যে----- 
মনে- মনে হাসিটাকে কান্নায় পরিণত করতে
লেগেছিল উঠেপড়ে-----

হায় পোড়াভাগ্য-----এত ভেবে শেষমেশ
এই জানলাম------
হাসি আর কান্না একই মুদ্রার দুটি পিঠ  !

কখনো হাসি কান্না হয়ে যায়
আর কান্না হয়ে যায়  হাসি  ---- 

আমার চোখের জলে হাসির মুক্তাহার
কার জন্য যে গেঁথে চলেছি জীবনভোর
কবে যে তার জীবনে আসবে 
সেই ভোর, -------------------
জানিনা ......।।





Sunday 17 April 2016

মেয়াদ MEYAD

আর তো দিন কয়েক বাকি-----
-----তারপর-----
ফুল যাবে ঝরে,
রূপ যাবে মরে ,
রঙ যাবে সরে    
       জীবনের ।

তোমার-আমার এই
প্রেমে-গড়া সৌধ
ধুলোমাটি চিনে নেবে
        মরণের ।।

-----তারপর ----
তুমি-আমি রয়ে যাবো
স্মৃতির পাতার মৃত নির্যাসে 
দূরে- ফেলে-দেওয়া
প্রতিশ্রুতিতে
        ক্ষণিকের ।।

  

স্বর্গ SWORGO



শুনেছো কি মশাদের কান্না?
তাঁরা  মানুষের খুন  ছাড়া খান্ না।।
ছারপোকা সুখে থাকে খাটে ---
তাদেরও তো খুনে রাত কাটে !!
আরও আছে মাছি দিনমানে
অতিশয় পাজি, ভ্যানভ্যানে ।।
আরশোলা, টিকটিকি কত-----
যেন কত বন্ধুরই মত !
এই সব মেনে নিয়ে বাঁচি,
স্বর্গ বড়ই কাছাকাছি !!


কথা KAWTHA

কথা
ভারি এলো-গেলো
কথা এলোমেলো 
কোথায় হারালো
                 অধরে ------

তোমাকে দেখার 
ছলে, বার-বার 
কথা না-দেবার
                    প্রহরে ।।

Tuesday 12 April 2016

সীতাহরিণ SITAHORIN

      সীতাহরিণ
গোধূলির সোনামেঘে 
আমি সীতাহরিণ দেখেছি ।
তবু
   লক্ষ্ণণরেখার পারে  যেতে সাহস করিনি ।

যেতাম যদি , হয়তো পেতাম
মনের লাগাম খোলা ------
ইচ্ছেহরিণ্‌ - সীতাহরিণ- মায়া।। 

তোমার জন্য সোনার খনি 
খনন করতে  পারি
কিন্তু দুঃখ এটাই ,
বারণরেখা লাঘন করার শক্তি আমার নাই। 

তাই 
মনের হরিণ লাগাম টেনে 
চরে বেড়ায় রেখার ওপার দিয়ে ।।

মনেই থাকে সোনাহরিণ-সীতাহরিণ-ছায়া ।।




Monday 11 April 2016

নতুন বছর NOTUN BOCHHOR




                                                                     নতুন বছর 


বৈশাখী রোদ জ্বালায় যখন,ঘর্ম ছোটায় গাত্রে, 
চক্ষু আঁধার, অকূল পাথার ফিরছি কেবল সাঁতরে !
লোকটা আমি নই ডুবুরি, দেখছি না তাই হাতড়ে ---
নতুন বছর আনল এ কী উপচে-পড়া পাত্রে?

আমের সুবাস মনের হুতাশ মিলায় পলকমাত্রে,
জুঁই-চামেলির হাসির আভাস স্বপ্ন জাগায় রাত্রে ।


'আজকে তোদের দিলেম ছুটি ' ---গুরু বলেন ছাত্রে ---
'বছর-শুরুর নতুন দিনে খুশির নেশায় মাত্ রে!' 

জলছবি JAWLCHHOBI

                                              জলছবি
   
                           জল চাইলাম ছাতি- ফাটা দিনে
                           তখনো দেখিনি আয়নায়
                           এক সমুদ্র লোনা -জলে ভরা
                           আমারি দুচোখ ভেসে যায় ।।

Friday 8 April 2016

লীলা LEELA




                                                             লীলা

তুমি এসেছিলে, লীলা খেলেছিলে,
                     আমি মাটিতে দেখেছি
                                         পায়ে দলে যাওয়া ফুল


         তুমি চলে গেছো  , প্রাণে মিশে আছো ,
                        আমি পেরিয়ে এসেছি
                                       ভালোবাসা নদীকূল ।।