নবনীচোরা NOBONICHORA

ওগো নবনীচোরা,
তুমি রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাঁশরীর চোরাস্রোতে
বেদনা বাজাও, ঝরাও আনন্দাশ্রু -----

হাসিমাখা ঐ অধরে তোমার
ব্যথাতুর শ্রাবণ তামসী ঘোরা ---

আ্সো যখন কাঁটার পথে 
পা ফেলে বন্ধুর দ্বারে 
বক্ষলগ্ন প্রেমিকা তখন
 জীবন-সরসী পার হয়ে 
লক্ষ জন্ম লয় তোমার কোলে-----

তুমিও সহস্র - দিনের লীলাখেলা সেরে
তাকে তুলে নাও অধরে তোমার
বাজাবে বলে, কাঁদাবে বলে -----

শিম্পী SHILPI

তোমার তুলির এক-আধটি টান 
দাও না আমার হাত দিয়ে ---

ছবির সুরে ফুটে উঠুক 
জীবন- খেলার গান ----

মরণ-দিনের নিশ্বাসে , 
প্রাণের সাদা ক্যানভাসে -----

গিন্নি GINNI

গিন্নি আমার যাচ্ছে চলে বাপের বাড়ি !
চটের ব্যাগে ভরতি করে একশো শাড়ি ----
ক্যাবলা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি,
ট্যাক্সি এবার ডাকবো নাকি?


আমি যেমন ধোপার গাধা,
পায়ে ধরেই বেদম সাধা

বেগুন-ক্ষেতে-কাক-তাড়ানো-কেলে-হাঁড়ি!!!!

অসময় AWSHOMOY

ভুলে ছিলাম, ভালো ছিলাম।
কেন এলে অসময়ে গোধূলি -দিগন্তে? 
এলে যদি, দেখা না দিয়েই 
চলে যাবে এ জন্মের মতো?

যাবেই যখন, একটু সময় দাও -----
তোমায় দেওয়া আমার না-বলা  কথাটি
ঝরে পড়ে আছে ফুলগাছ টির নিচে ----
ওকে তুলে নেবে না তোমার বুকে?


তোমার কুয়াশায় ঢাকা হাসিটুকু---
যা এতদিন আমার বুকের আয়নায়
লুকিয়ে রেখেছিলাম ------

সেই হাসি হোক আমার 
বাকি দিনগুলির রসদ
তোমায় বিনা জীবন 
চোখের জলে কাটিয়ে যাবার -----

গোধূলি GODHULI

গোধূলি GODHULI


আমি অনেকদিন আকাশ দেখিনি
দেখিনি গোধূলি-বেলায় 
কী রঙে সেজে ওঠে 
নববধূ 'আশমানি'?

আজ দেখলাম তার 
বিবাহলগ্ন আসন্ন ।

এমন লজ্জান্ম্র রাঙা আকাশ 
আগে কোনোদিন 
চোখে পড়েনি আমার।

যেন লাল ঘোমটায় মুখ ঢাকা এক কনে-----
তার নীল বেনারসিতে খচিত
চন্দ্র -সূর্য- তারার হিরেমানিক-----

সে রয়েছে তার জীবনের 
পরম লগনের অপেক্ষায় 

কখন আসবে সেই বাঞ্ছিত শুভক্ষণ 
সাদা মেঘের মালা গলায়
নীল চাঁদোয়ার নীচে? 

মুখ MUKH

আমি এই বেদনার মুখ চিনিনা, 
যে বেদনা আমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় 
সাগর, নদী, উপত্যকায়----
কখনও মুখ দেখিনি তার 

শুধু কখনও আয়নাতে চোখ পড়লে
ওই অচেনা মুখ আমাকে
তার খবর দেয়
আমি তার চোখের আলোতে 

সাগর দেখি, দেখি নদী, 
পাহাড়, উপত্যকা,
আর দুচোখ বেয়ে অশ্রু হয়ে 
সেই বেদনা ঝরে ...। 

দোলন- কেদারা ROCKING - CHAIR

ওই যে দোলন- কেদারা 
ও কি আজ নিজে- নিজেই দোলে?
কেউ তো বসে নেই তাতে -----

একদিন তুমি ছিলে,
ছিল তোমার হাতে কুরুশ- কাঁটার বোনা 
মনের সুখে দুলত তোমার 
দোলন- কেদারা ।।

লেসের জাফরি- কাটা বুনন
তোমার হাতের থেকে
লম্বা হতে হতে ছুঁয়ে যেতো মাটি ।


তোমার সেই হাতদুটি আজ
 নিথর আলোর দেশে  -----
থেমে গেছে শূন্য দোলন- কেদারা----

আজ এ ঘরে এসে 
বড়ই একলা আমি
শুধু চোখদুটো চেয়ে থাকে 
ঐ একলা কেদারার দিকে।

ঘরের মধ্যে সময় থেমে গেছে-----
দুলতে দুলতে কখন স্তব্ধ হয়ে গেছে----
তোমার  দোলন- কেদারা ..

সাহসিকা SHAHOSHIKA

সাহসিকা

তুমি ছাতা দিয়ে মেঘবৃষ্টি আড়াল করো 
তোমার চোখের আড়াল দিয়ে 
আমার শরীর ভেজে।
শ্যাওলা -ঘেরা ঘাটের পথে 
একা চলি, জানিনা কার
 অভিসারে----
আমার সঙ্গে চলে কে যে 
নাম জানিনা তার -----
দেখেছি তার কাঁখে কলস 
পায়ে রূপোর মল -----
ললাটে আঁকা অলকা- তিলকা ।
মেঘবৃষ্টি কিছুই মানে না সে
সেও কি আমার মতোই
অভিসারিণী ?


আমিও যদি হতে পেতাম 
তেমন সাহসিকা----
শ্যাওলা -ঘেরা  পিছল ঘাটে
পথ হারাতাম না ।

হরতনী QUEEN OF HEARTS

হরতনী  QUEEN OF HEARTS

রানী ছিলে একদা কারো হৃদয়ের 

আজ তা বোধহয় গেছ ভুলে
আজ সেই হাসি অধরে 
ফুটে ওঠে কি 
চকিতে হঠাৎ মনে হলে ?

তাই হোক, ভুলে যদি ভালো থাকো 
মন যদি না-ই মনে করে
পথিক ছিল কে কবে
তোমার মনের পথে 
চলার ছন্দে সে গেছে সরে। 

শ্রাবণ SRABON

শ্রাবণ 

বৃষ্টি থেমে গেছে।
এবার তুমি এ ঘর ছেড়ে
অনেক দূর যেতে পার।

এ দূর সে দূর নয় 
যা ফিরে আসার পথটুকু 
ধুলোয় মিশিয়ে দেয় 

এ দূর সেই দূর 
যা তোমার চুলের স্মৃতিরেখা
আঁধার- আলোয় মিলিয়ে দেয়।

আয়নায় চোখ মেলো যখন 
চিনতে কি পারো 
সেই দুরের পথের চলার ছন্দ ?

যা বার বার ফিরে আসে
তোমাকে ফিরিয়ে দেবে বলে
মেঘভেজা সেই আকাশের 
  

আশ্রয়ের কোলে ... 

বাগান BAGAAN

আমার ফুলের বাগানে কখনও ফোটেনি ফুল
কোনো প্রজাপতি ডানা মেলে রঙ ছড়িয়ে
ভাসেনি পাতার সবুজে

আমার পায়ের নিচে 
ঘাস নেই...।আছে কাঁটা...।। 
আছে মাটি...।রক্ত দিয়ে ধোয়া ...

আমার জানালা দিয়ে কখনও আসেনি আলো
আকাশও দেয়নি ডাক 
ছুটির দিনের ছোঁয়া দিয়ে...।।

আমি এই একলা দিনে 
ঊষর মাটির উপর 
পড়ে আছি কার অপেক্ষায় ?

আদর AADOR

ভালোবাসলে মন মেঘ হয়ে যায়,
তখন দুচোখ দিয়ে
অঝোর ঝরে আদর-----

তোমার চুলের কালোয় হাজার রাতের তারা
ভালো্বাসার আঁধার নিয়ে আসে

রাত হয়ে যায় দুচোখ বোজার আগেই,
মনের মেঘে অঝোর ঝরে আদর-----


ভোরের আলো আমার জন্য না,
আলোয় তোমার মুখ মিলিয়ে যায়

গভীর রাতে তোমার চুলের তারায় 
ভালো্বাসায় অঝোর ঝরে আদর-----